কেন ডাকসুতে ছাত্র ইউনিয়ন এবং প্রগতিশীল ছাত্রজোটকে ভোট দিবেন


ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলি
সহ সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা মহানগর সংসদ

ডাকসু নির্বাচন শেষবার হয়েছিলো ২৮ বছর আগে। স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারের অধীনে ডাকসু নির্বাচন হয়নি। এখানে উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধত্তোর বাংলাদেশে  ১৯৭৩ সালে যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো, সেসময় গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকলেও তারা নির্বাচিত হয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রাক-কালে।
শুরুতে বোঝা দরকার এই নির্বাচন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২৮ বছর ধরে বন্ধ কেন রাখলো? অথবা কেন এত বছর পরে হুট করেই আবার ডাকসু? বিএনপি বা আওয়ামীলীগ নামে প্রধান যে দুটি দল ক্ষমতা দখল অথবা মানুষের ভোটে জিতে এই প্রায় তিন দশক ধরে পালাক্রমে এই দেশকে শাসণ করেছে, তারা কেন এই নির্বাচন এতদিন ধরে বন্ধ রাখলো? এর সবথেকে সহজ উত্তর যেটা আমরা দিয়ে থাকি তা হলো, তারা আইয়ুব অথবা এরশাদের পরিণতি দেখে ভীত। এ যাবৎকাল বাংলাদেশের সকল দল ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে অনন্তকাল ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছে। এর থেকে তৈরি হয়েছে তাদের অল্প সময়ে যত পারো লুটেপুটে খাওয়ার প্রবণতা। আবার বিরোধী দলে থাকলে শেখ হাসিনা গ্রেনেড খেয়ে মরতে বসে, খালেদা জিয়া জেলে ঢুকে যায়। এই ভীতি থেকেও অনন্তকাল ক্ষমতায় থাকার একটা চেষ্টা দেশের বড় দুই দল করে গিয়েছে এই তিন দশক ধরে। লম্বা সময় গদিতে টিকে থাকার এই লড়াই তাদেরকে করে তুলেছে স্বৈরশাসক। বাংলাদেশের ইতিহাসের দিকে তাকালে এই কথা সহজেই বুঝতে পারি যে একজন স্বৈরশাসক সবথেকে বেশি ভীত হতে পারে এ দেশের ছাত্রসমাজকে দেখে। এবার লং স্টোরি শর্ট করে ফেললে আপনিও বুঝে যাবেন কেন ২৮ বছর ধরে ডাকসু নির্বাচন নেই। শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়ার ক্ষমতাকালে সমস্ত অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ সর্বদা সরব থেকেছে। যেমন তারা ছিলো আইয়ুব বা এরশাদের আমলেও। সুতরাং, বাংলাদেশের এইসব তথাকথিত গণতান্ত্রিক সরকার নির্বাচিত হওয়ার পরে আর যাই হোক, ছাত্রদের কথা বলার কোনো প্ল্যাটফর্ম দেওয়ার কথা মাথায়ও আনেননি।
ছাত্র সংসদের কাজ কি শুধু মিছিল মিটিং করা? নিশ্চয়ই নয়। ছাত্র সংসদের কাজ খেলাধুলা আয়োজন করা, বিনোদনমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করা, ছাত্রদের মধ্যে সুশৃঙ্খলতা এবং সৌহার্দ বজায় রাখা। কিন্তু এর জন্মের পর থেকেই এই সবকিছুকে ছাপিয়ে ছাত্র সংসদগুলো হয়ে উঠেছিলো প্রতিবাদের সবথেকে বড় প্ল্যাটফর্ম। এ দেশের ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে অন্য যেকোনো গণ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্ররাই, এবং সেই নেতৃত্বে সর্বদাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে নির্বাচিত ছাত্র সংসদ।  এমনকি, ছাত্র সংসদ নির্বাচণ বন্ধ যখন থেকেছে তখনও দেশের প্রায় সমস্ত বড় আন্দোলনে নেতৃত্বে ছিলো ছাত্ররাই। গণজাগরণ মঞ্চ বা নিরাপদ সড়ক চাই তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ। এই সরকারগুলো প্রাণপণে চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের বিরাজনীতিকরণ করতে যাতে তারা কিছু উঁচু দালানকোঠা, ফ্লাইওভার আর থ্রিজি-ফোরজি ইন্টারনেট দেখিয়ে খুব সহজে এই ‘’আই হেইট পলিটিক্স’’ প্রজন্মের সমর্থন পেয়ে যায়। পাঁচ বছরের এক টার্ম ক্ষমতায় যদি ছাত্রদের সামাল দিতে দিতেই সময় কেটে যায়, তাহলে দশ ট্রাক অস্ত্র ঢুকবে কখন, আর সুন্দরবন বেচা হবে কখন।
এবার আসি, কেন এত বছর পরে ডাকসু নির্বাচন। আমাদের দেশের নির্বাচনের হালচাল কী তা নিশ্চয়ই নতুন করে বলে দেয়ার কিছু নেই। শেষ কবে আমি এই দেশে একটা ফেয়ার ইলেকশন দেখেছি তা মনে করাও কষ্টকর। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল এবং তার অঙ্গসংগঠনগুলো এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে যে, আর কোনো পর্যায়ের কোনো নির্বাচনের ব্যালট বাক্স আগের রাতে পূরণ করা তাদের বাকি নেই। ছাত্র সংসদ নির্বাচনটা বাকি থাকলেও সেটাও তারা সম্প্রতি পূরণ করে দিয়েছে। ফরিদপুরের সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের খবর নিতে সেখানকার সহযোদ্ধাদের ফোন করে জানতে পেরেছি ব্যালট বাক্স পূরণ হয়েছে আগের রাতেই। ছাত্রলীগের প্রার্থী পেয়েছেন ছয় হাজার ভোট, ছাত্রদল পেয়েছে দুশো ভোট এবং ছাত্র ইউনিয়ন একশোর কিছু বেশি।
ডাকসু নির্বাচন দেয়ার কারণ দুটি হতে পারে। এক, একটা ফেয়ার ইলেকশনের নাটক সাজিয়ে ছাত্রদের আই ওয়াশ করে গেস্টরুম নির্যাতন, ক্যাম্পাসে হেলমেটবাহিনীর মতো সমস্ত অপরাধকে অফিশিয়ালি ধামাচাপা দেয়া। এবং দুই, আরো একটি কারচুপির নির্বাচন করে সমস্ত অপরাধকে একটা লিগ্যাল ফরম্যাটে আনা। গেস্টরুম নির্যাতনের রাজনৈতিক ফায়দা এবং পলিটিক্যাল ট্র্যাপের কথা নতুন করে ব্যাখ্যা করার কিছু নেই। এ নিয়ে যথেষ্ট আলাপ অনেক মানুষ করেছেন। আবাসিক হলগুলোতে প্রভোস্ট হয়ে উঠেছেন নিতান্তই এক কাঠের পুতুল। সিট বন্টনের সমস্ত প্রক্রিয়া নিজ হাতে তুলে নিয়েছে ক্ষমতাশীন ছাত্র সংগঠন (এখন ছাত্রলীগ, তখন ছাত্রদল)। ক্যাম্পাসে প্রশাসন বা ছাত্রলীগবিরোধী যেকোনো আন্দোলনে গত কয়েক বছর ধরে এসে বাঁধা দিয়েছে খোদ ছাত্রলীগ। কখনো সেটা প্রশাসনের আমন্ত্রণে এবং কখনো নিজ তাগিদে। একটি “নির্বাচিত” ছাত্র সংসদে তাদের নেতৃত্ব আসা মানেই এই সকল অপরাধ রাতারাতি জায়েজ হয়ে যাওয়া। এতদিন তারা ছিলেন অনির্বাচিত নিপীড়ক, আর এবার একেবারে হাজার ভোটে নির্বাচিত।
আসুন, এবার দেখি কেন আপনি ছাত্র সংসদ নির্বাচনে আমার সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এবং তার জোট প্রগতিশীল ছাত্র জোটকে ভোট দিবেন। একটু লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন, যে ধরণের নিপীড়ন-নির্যাতনের আলাপ লেখার আগের অংশে করলাম, সেই সমস্ত নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে সদা সরব ছিলো আমার সংগঠন এবং জোট। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা সহ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে যেকোনো পর্যায়ের শিক্ষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এই জোট। গণজাগরণ মঞ্চ, বাঁচাও সুন্দরবন, পালটা আঘাত, জাস্টিস ফর তনু, ভাস্কর্য আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক চাই-এর মতো অসংখ্য জনগুরুত্বপূর্ণ গণ আন্দোলনে সামনের কাতারে থেকে ভুমিকা রেখেছে প্রগতিশীল ছাত্র জোট।
আপনি নিশ্চয়ই ভুলে যাননি টিএসসির মোড়ে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা শহীদ রাজুকে? আপনার ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী মিছিলে ছাত্রদলের গুলিতে প্রাণ গিয়েছিলো তাঁর। নিশ্চয়ই আপনি চেনেন ভাষা মতিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম-কে? নিশ্চয়ই আপনার বহু প্রতিবাদের ভাষা আপনি শুনতে পান সঞ্জীব চৌধুরী্র গানে,  জহির রায়হানের সিনেমায় অথবা রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতায়? কিন্তু আপনি কি জানেন এরা প্রত্যেকেই সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা? কাজেই গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, আমার সংগঠন থেকে কখনো কোনো গেস্টরুম নির্যাতনকারীর জন্ম হবে না। জন্ম হবে না কোনো রড হাতে তেড়ে আসা হেলমেটবাহিনীর, আমার সংগঠন কখনোই আপনাকে বাধ্য করবে না মিছিলে যেতে। বরং আপনার যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলনে আপনারা যাদের পাশে পাবেন তাদের নাম ছাত্র ইউনিয়ন, তাদের নাম প্রগতিশীল ছাত্র জোট।
সেন্ট্রাল পোলে প্রগতিশীল ছাত্র জোটের পূর্ণাঙ্গ প্যানেলে ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে দাঁড়িয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী। আপনি যদি সমসাময়িক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হন, তাহলে আপনার কাছে লিটন নন্দীকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। জাতীয় রাজনীতির মোটামুটি খবর রাখা বা খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস থাকলেও নিশ্চই আপনি এতদিনে লিটন নন্দীর নাম শুনে ফেলেছেন। ২০১৫’তে যখন টিএসসিতে হাজার হাজার মানুষের ভীড়ে কয়েকটি মেয়ের শাড়ি টেনে খুলে ফেলেছিলো হায়নারূপী কিছু মানুষ, তখন শত দর্শকের ভীড় ঠেলে গিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের তিন নেতা। লিটন নন্দীর নেতৃত্বেই তারা সক্ষম হয়েছিলো এই হায়নাদের রুখে দিয়ে নির্যাতিতাদের নিরাপদে বের করে আনতে। মার খাওয়ার, মার দেওয়ার এক পর্যায়ে কখন লিটন নন্দীর হাত ভেঙে গিয়েছিলো সেটা তিনি নাকি বুঝতেও পারেননি। নিজের পরনের পাঞ্জাবি সেই মেয়েদের একজনকে পরিয়ে দিয়ে খালি গায়ে টিএসসিতে ঢুকেছিলেন লিটন নন্দী। তারপর অনেক ঘটনা। প্রচুর সাক্ষ্মী, প্রচুর প্রমাণ, সিসিটিভি ফুটেজ, একাত্তর টেলিভিশনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে অপরাধীদের চেহারা ফাস। কোনোকিছুতেই এই ঘটনার বিচার করে উঠতে পারেনি সরকার। আমরা মিছিল করেছি, সমাবেশ করেছি, মানুষকে সচেতন করতে ঘুরে ঘুরে গণমানুষের কাছ থেকে দুই টাকা/পাঁচ টাকা করে গণচাঁদা তুলে কনসার্ট করেছি। আমরা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে গিয়েছি। লিটন নন্দী ভাঙা হাত নিয়ে ব্যারিকেডের ওপর উঠে সবাইকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, লাঠির বাড়ি খেয়েছেন, সেই ভিডিও এখনো ইউটিউবে আছে। তারপরেও প্রসাশন এর বিচার করেনি, এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার কোনো আশ্বাস দেননি। এরপর থেকে প্রত্যেক বছর পহেলা বৈশাখে ছাত্র ইউনিয়ন নিজ দায়িত্বে ক্যাম্পাসকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা করেছে। আমরা গড়ে তুলেছি নিজেদের নিরাপত্তা বাহিনী। পহেলা বৈশাখের আনন্দ ফূর্তি বিসর্জন দিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জোনে আইডি কার্ড গলায় ঝুলিয়ে সতর্ক চোখে ঘুরে বেড়িয়েছে লিটন নন্দীর কর্মীবাহিনী। নারী কমরেডরা মার্শাল আর্টের বিশেষ বাহিনী গঠন করেছেন ‘প্রীতিলতা ব্রিগেড’’ নামে। এরপরে এক সময় হয়তো সবকিছু শান্ত হয়ে গিয়েছে, কিন্তু ছাত্র ইউনিয়ন তার আন্দোলন থেকে সরেনি। ক্যাম্পাসের প্রতিটি যৌক্তিক আন্দোলনে সে ভূমিকা রেখেছে। ভাস্কর্য আন্দোলনে গ্রেফতার হয়েছেন লি্টন নন্দী। সারা ক্যাম্পাসে রব উঠেছে, “লিটনদার মুক্তি চাই, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করো”। নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগ হামলা চালালে ছুটে গিয়েছেন লিটন নন্দী। হামলায় মাথা ফেটে গিয়েছে তাঁর, পরেরদিন সকালে ঠিকই মাথায় সেলাই নিয়েই বীরের বেশে ফিরে এসেছেন মধুর ক্যান্টিনে। অনেক অপপ্রচার, অনেক নোংরামীর পরেও লিটন নন্দী থামেননি। মোটা বেতনের চাকরীর প্রলোভন ভুলে এই মেধাবী ছাত্র থেকে গিয়েছেন আপনাদের পাশে, আপনাদেরই জন্য।
ডাকসুর সেন্ট্রাল প্যানেলে সাহিত্য সম্পাদক পদে লড়ছেন আরেকজন সংগ্রামী সহযোদ্ধা রাজীব দাস। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। নিতান্ত সাধারণ ঘরের একজন সন্তান, রানা প্লাজার হত্যাকান্ডে নিজের ভাইকে হারিয়ে যিনি বুঝেছিলেন, লড়াই করেই বাঁচতে হবে, এই পৃথিবীতে সাম্যের লড়াইয়ের চেয়ে মহান আর কিচ্ছু নেই। সদা পরোপকারী, তুখোড় স্লোগান দেয়া এই নেতাও অসংখ্যবার হামলা-মামলার স্বীকার হয়েছেন। রণাঙ্গনে সহযোদ্ধাদের ডিফেন্ড করতে সবার আগে এগিয়ে যান তিনিই। নিজের শরীর দিয়ে রক্ষা করেন আমাদের। আমাদের বাঁচাতে গিয়ে মার খেয়ে, মাথা ফাটিয়ে এসে ভর্তি হন হাসপাতালে।
আরো দাঁড়িয়েছেন ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিব মোহাম্মদ আশিক (ছাত্র পরিবহন সম্পাদক) এবং মীম আরাফাত মানব ( আন্তর্জাতিক সম্পাদক)। প্রথমজনকে আমি দেখছি আমার আট বছরের ছাত্র আন্দোলনের জীবনের শুরু থেকেই। স্কুল জীবন থেকে ছাত্ররাজনীতি শুরু করা এই অভিজ্ঞ নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগেই হয়ে উঠেছিলেন মিরপুর থানা ছাত্র ইউনিয়নের সফল সংগঠক এবং ঢাকা মহানগর সংসদের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। দ্বিতীয়জনের মতো বিচক্ষণ, জ্ঞানী এবং বাস্তববোধসম্পন্ন নেতা বোধকরি এই ক্যাম্পাসে কমই আছে। কম্পিউটার সাইন্সের এই মেধাবী ছাত্র যেমন নিজে বহু বিষয়ে পড়েছেন প্রচুর, তেমনই তার অর্জিত জ্ঞান অন্যান্য কমরেডদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে ক্লান্ত হননি কক্ষনো।
এ ছাড়াও বিভিন্ন হল সংসদে প্রার্থী হয়েছেন আমারই সহযোদ্ধা, বড় ভাই/আপু, বন্ধুবান্ধব , এমনকি ছোট ভাই/বোনরাও। আমি সকলের জন্য প্রাণখুলে শুভকামনা জানাই। আপনাদের কাছে ভোট চাই, সমর্থন চাই। আপনারা নিশ্চয়ই শামসুন্নাহার হলের নির্যাতন ভুলে গিয়ে ছাত্রদলকে নির্বাচিত করবেন না? আপনারা নিশ্চই গত দশ বছরের সব অবিচার ভুলে গিয়ে ছাত্রলীগকে নির্বাচিত করবেন না? আমি জানি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিচক্ষণ মানুষজন পড়ে, আমি জানি তারা ভুল সিদ্ধান্ত নিবে না। কিন্তু এর সমস্তকিছুই  তখন সম্ভব হবে, যখন নির্বাচনটি ফেয়ার হবে। তাই নিজের ভোট দিতে যান, নিজ দায়িত্বে নিজের কেন্দ্র পাহাড়া দিন। আপনার ভোট যেন একান্ত আপনার থাকে, আপনার ভোট যেন আপনি নিশ্চিন্তে দিয়ে নিরাপদে বের হতে পারেন। শতচেষ্টা করেও যখন আবাসিক হল থেকে শিফট হয়ে একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র আসেনি তখন সহজেই অনুমান করা যায় ১১ই মার্চ এদের মতলবটা কী।
তাই ক্যাম্পাসে নিজের অধিকার নিজে বুঝে নেয়ার সময় এখনই। আশা করি আপনার সিদ্ধান্ত ছাত্রসমাজের বিপক্ষে হবে না।
#জিতবে_ক্যাম্পাস_এ_ফাগুনে

Comments