মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের স্মৃতিবিজড়িত পুকুর সংরক্ষণের দাবি ছাত্র ইউনিয়নের


আধুনিক বরিশালের রূপকার মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের নিজ বাসভবনে নির্মিত  সরকারি বরিশাল কলেজের মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের খনন করানো পুকুরটি ভরাট করে ফেলার তোড়জোড় শুরু করেছে কলেজ প্রশাসন। ১৯৯১ সালে তথাকথিত 'উন্নয়নের' নামে এই কলেজে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের বাসভবনে অবশিষ্ট অংশটিও ভেঙে ফেলা হয়। বর্তমানে একমাত্র এই পুকুরটিই প্রতিষ্ঠাতার স্মৃতি ধরে রেখেছে। একসময় এই পুকুর পাড়ে এবং অশ্বিনী দত্তের বাসভবন সম্মুখে  প্রাদেশিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সম্মেলনে মাওলানা শওকত আলী, মাওলানা মোহাম্মদ আলী, মহাত্মা গান্ধী, সুভাষ বসু, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক ও সুরেন্দ্রাথ ব্যানার্জীসহ শত মনিষীর পদভারে ধন্য হয়েছিল এই পুকুর ও বাসভবন চত্বর। এসব বিশিষ্টজনরা এই পুকুরের পানি ব্যবহার করেছেন। সেদিক থেকে এই পুকুরটি ইতিহাসের অনেক কিছুর স্বাক্ষী। তাই এই পুকুরটির একটি ঐতিহাসিক মূল্যও আছে।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সরকারি বরিশাল কলেজ সংসদের সভাপতি আলী মোর্তজা সাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক অয়ন সরকার সুমন এক যৌথ বিবৃতিতে  বলেন, "মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের স্মৃতিবিজড়িত এই পুকুর ভরাট করে ফেলা প্রকৃতপক্ষে কলেজের প্রতিষ্ঠার সমস্ত স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলারই নামান্তর। আমরা গত ২১ জানুয়ারি আমাদের কলেজ সম্মেলন থেকে এই পুকুর সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে আসছি। তখনও আমাদের কলেজ প্রশাসন এই দাবি প্রত্যাহার করার জন্য বারংবার আমাদের চাপ দিতে থাকে। বরিশাল শহরে এই পুকুরটির যে ঐতিহাসিক মূল্য, সে জায়গা থেকে হলেও এই পুকুর সংরক্ষণ করা জরুরী। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা এবং আধুনিক বরিশালের রূপকার মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের বাসভবনে এই কলেজ নির্মিত হলেও, এই একটিমাত্র পুকুর ছাড়া এই কলেজে তাঁর আর কোন স্মৃতিচিহ্ন নেই। অথচ আমাদের কলেজ প্রশাসন সেই পুকুরকেও কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রেখে শিক্ষার্থীদের অশ্বিনী কুমার দত্ত সম্পর্কে জানার আগ্রহকে দমন করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইটের খোয়া ফেলে প্রশাসন এই পুকুর ভরাট করার উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা কলেজ প্রশাসনের এই হীন উদ্যোগের তীব্র নিন্দা জানাই, একই সাথে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অশ্বিনীকুমার দত্তের স্মৃতিচিহ্ন ও বিগত ইতিহাস সংরক্ষণে কলেজ কতৃপক্ষের উদাসীনতা আমাদের ক্ষুব্ধ করে। ইতিহাসের প্রতি দায়হীন প্রজন্ম গড়ার কলেজ কতৃপক্ষের এই প্রয়াস ছাত্র ইউনিয়ন যেকোন মূল্যে রুখবে। আমরা অবিলম্বে এই পুকুর সংরক্ষণ ও শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি এবং অশ্বিনী কুমার দত্তের স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলার মত অপচেষ্টার সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে কলেজ প্রশাসনকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। "

Comments