শহীদ মঈন হোসেন রাজু স্মরণ, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস প্রতিরোধে ছাত্র ইউনিয়ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) শহীদ মঈন রাজু স্মরণে নির্মিত সন্ত্রাসবিরোধী রাজু স্মারক ভাস্কর্য 

জাহাঙ্গীর আলম
ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী মঈন হোসেন রাজু। ১৯৯২ সালের ১৩ই মার্চ বিকেলেছাত্র দল ও ছাত্র লীগের মধ্যে ক্যাম্পাসে দখল দারিত্ব প্রতিষ্ঠায় প্রচন্ড গোলাগুলি চালায়,যাতে ক্যাম্পাসে অবস্থানকারী শতশত শিক্ষার্থী জিম্মি হয়ে পরে।সেখানে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা কোন ভুমিকা রাখেনি।রাজু এ ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে পুলিশের নিরব ভুমিকার নিন্দা এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবী জানালে পুলিশ সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।পুলিশের এই ন্যাক্কারজনক ভুমিকার প্রতিবাদ এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবী নিয়ে রাজু গনতান্ত্রিক ছাত্র ঐক্য’নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করে একটি প্রতিবাদী মিছিল বের করলে মিছিলটি যখন টিএসসির সড়কদ্বীপের কাছে তখন হাকিমচত্বরের দিক থেকে একঝাক বুলেট ছুটে আসে। বুলেটে বিদ্ধ হয় রাজু । ক্যাম্পাসে  সন্ত্রাস দখলদারিত্ব  প্রতিরোধে শহীদ হন মঈন হোসেন রাজু  , যার স্মরণে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  টি এস সির সামনে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু স্মারক ভাস্কর্য নির্মিত হয় , যা প্রকাশ করে সন্ত্রাস-দখলদারিত্ব প্রতিরোধে ছাত্র ইউনিয়নের অপোষহীন  ভূমিকা ।

এ দেশের যে সকল অর্জনে আমরা গৌরবান্বিত হই, তার সব কিছুতেই ছাত্র সমাজের ছিল অগ্রণী ভূমিকা । বরাবরই সকল অন্যায় প্রতিরোধে ছাত্র সমাজ আপোষহীন ভূমিকা এদেশের লুটপাট নির্ভর স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের মাথাব্যাথার কারণ। এজন্য ছাত্র সমাজের ভেতরে যেকোন নৈতিক আন্দোলন দানা বাঁধতে না পারে সেজন্য শাসকগোষ্ঠীর দরকার তাদের আজ্ঞাবহ তাঁবেদারি ছাত্র সংগঠন যারা শোষকের পক্ষে কাজ করবে  ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবির, ছাত্র সমাজ, এরকমই শাসকগোষ্ঠীর তাঁবেদার সংগঠন। তাই এদের ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে ভীষণ সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

মানুষ মূলত নিজেকে অপরিপূর্ণ ও দুর্বল প্রাণী হিসেবে প্রকৃতিতে দেখতে পায়। যৌথতা মানুষকে প্রকৃতিতে নিরাপদ করে রাখে। আর যৌথতার চর্চা হল গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করার চর্চা। ছাত্র ইউনিয়ন প্রগতিমুখী সংগ্রামে সমগ্র ছাত্রসমাজের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণের স্বপ্ন দেখে। এ পথেই অর্জিত হবে আগামীর সাম্যের সমাজ।

লেখক: সহ সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বরিশাল জেলা সংসদ।

Comments